দুখু মিয়ার কাহিনী

 

এক গ্রামে বাস করত দুখু মিয়া নামে এক গরিব ছেলে। তার বাবা ছিলেন একজন কৃষক এবং মা গৃহিণী। দুখু মিয়া খুব ছোট বয়সে তার বাবাকে হারায়। ফলে সংসারের সব দায়িত্ব তার ওপর এসে পড়ে।

গ্রামে একটি বড় জমিদারের বাড়ি ছিল। দুখু মিয়া প্রায়শই জমিদারের জমিতে কাজ করত। কিন্তু জমিদার ছিলেন খুবই কঠোর এবং নির্মম। কাজের বিনিময়ে দুখু মিয়া সামান্য কিছু খাবার পেত। তবু সে কষ্ট করে মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করত।

একদিন, দুখু মিয়া কাজ থেকে ফেরার সময় বনের পাশ দিয়ে হাঁটছিল। হঠাৎ সে একটি কাঁদার শব্দ শুনতে পেল। ঝোপঝাড় সরিয়ে সে দেখতে পেল, একটি ছোট হরিণ ফাঁদে আটকে আছে। তার পা রক্তাক্ত হয়ে গেছে। দুখু মিয়া দ্রুত ফাঁদটি খুলে হরিণটিকে মুক্ত করে দেয়।

হরিণটি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তাকায় এবং বলল, "তুমি আমার জীবন বাঁচিয়েছ, দুখু মিয়া। আমি জাদুর হরিণ। তোমার যে কোনো ইচ্ছা পূরণ করতে পারি।"

দুখু মিয়া প্রথমে বিশ্বাস করতে পারল না। কিন্তু হরিণ তাকে আশ্বাস দিল। তখন দুখু মিয়া বলল, "আমি শুধু আমার মাকে ভালো রাখতে চাই। আর যেন আমাদের অভাব না থাকে।"

হরিণটি তার শিং দিয়ে মাটি খোঁচা দিল এবং একটি সোনার মুদ্রা দিয়ে বলল, "তুমি যতবারই এই মুদ্রা ঘুরাবে, ততবারই তোমার প্রয়োজন মেটার জন্য ধন-সম্পদ পাবে। তবে লোভ কোরো না।"

দুখু মিয়া সেই মুদ্রা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। তার জীবনে দারিদ্র্য দূর হয়ে গেল। সে তার মাকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে লাগল।

শিক্ষণীয় বিষয়:

লোভ না করে পরিশ্রম ও সততার মাধ্যমে জীবনে সুখী হওয়া যায়। দয়া ও সহানুভূতির মূল্য সব সময় পাওয়া যায়।

No comments:

Post a Comment